১৪ লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর গৃহনির্মাণে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চুক্তি সই করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংক ও হাউস বিল্ডিং কর্পোরেশন। এত সুদের হার ধরা হয়েছে ৫ শতাংশ।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের উপস্থিতিতে সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক এবং বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের (বিএইচবিএফসি) সঙ্গে এই সমঝোতা স্মারক সই হয়। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষে অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন এমওইউতে সই করেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, অর্থ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার প্রমুখ।
অর্থ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, এ ঋণের আওতায় সকল সরকারি কর্মচারীদের আনতে প্রায় ২ বছর সময় লাগবে। সরকারের যেসব মন্ত্রণালয় বা প্রতিষ্ঠান অটোমোশন হয়েছে সেসব প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা আগামী ১ অক্টোবারেই এ ঋণের জন্য আবেদন করতে পারবে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণ অটোমশন হয়েছে ৫টি মন্ত্রণালয়।
সরকারের নবীন কর্মীরাও যেন একটি ফ্ল্যাট বা বাড়ির মালিক হতে পারেন সেজন্য একটি নীতিমালা করার কথা জানিয়ে গত জুনে অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, জুলাইয়ে শুরু হওয়া নতুন অর্থবছর থেকেই তা কার্যকর হবে। এরপর ৩০ জুলাই অর্থ বিভাগ থেকে ‘সরকারি কর্মচারীদের জন্য ব্যাংকিং-ব্যবস্থার মাধ্যমে গৃহ নির্মাণ ঋণ প্রদান নীতিমালা-২০১৮’ প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, চাকরি স্থায়ী হওয়ার পাঁচ বছর পর থেকে সরকারি চাকরিজীবীরা এই ঋণ পাওয়ার যোগ্য হবেন। আর আবেদনের জন্য সর্বোচ্চ বয়সসীমা হবে ৫৬ বছর। এ ঋণের সীমা ঠিক করা হয়েছে ২০ লাখ থেকে ৭৫ লাখ টাকা। ঋণ পরিশোধের জন্য সর্বোচ্চ সময় হবে ২০ বছর।
এ ঋণের জন্য ব্যাংক ১০ শতাংশ হারে সরল সুদ নেবে। অর্থাৎ চক্রবৃদ্ধি সুদ (সুদের ওপর সুদ) নেয়া হবে না। তবে ঋণগ্রহীতাকে দিতে হবে ৫ শতাংশ। বাকিটা সরকারের পক্ষ থেকে পরিশোধ করা হবে ভর্তুকি হিসাবে। শুধু বেসামরিক সরকারি কর্মচারীরা যারা স্থায়ী পদে চাকরি করেন তারাই এই ঋণ পাবেন। সরকারি চাকরিতে চুক্তিভিত্তিক, খণ্ডকালীন ও অস্থায়ী ভিত্তিতে নিযুক্ত কেউ এই ঋণ পাবেন না।
অর্থ বিভাগ সূত্র জানায়, গৃহঋণ দিতে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য একটি অভিন্ন আবেদনপত্র তৈরি করা হয়েছে। আবেদনপত্রের সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্র, চাকরি স্থায়ীকরণপত্র, বেতনের রশিদ, সম্ভাব্য পেনশন থেকে আয়, ব্যাংকের হিসাব বিবরণী এবং অন্য ব্যাংকে ঋণ থাকলে সে সম্পর্কিত কাগজ জমা দিতে হবে। ঋণ নেয়ার জন্য সরকারের অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান মনোনীত করার আগে অর্থ বিভাগের গৃহঋণ সেলের অনুমতি নিতে হবে। তবে এ কার্যক্রম যখনই বাস্তবায়ন হোক না কেন বয়সসহ অন্যান্য সব শর্ত গত ১ জুলাই থেকে বিবেচনা করা হবে।