সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন চিরবিদায় নেয়া ভাষা সৈনিক হালিমা খাতুন। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে হালিমা খাতুনের মরদেহে ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হালিমা খাতুনের মরদেহ সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়া হয় । সেখানে তার সাবেক সহযোদ্ধা, সহকর্মীসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধতন কর্মকর্তাসহ দেশের বিশিষ্টজনেরা।
হালিমা খাতুন ১৯৩৩ সালের ২৫শে আগস্ট বাগেরহাটের বাদেকাড়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। হৃদরোগ, রক্তদূষণ, কিডনি সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত নানা অসুস্থতা নিয়ে গত শনিবার রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল (মঙ্গলবার) মারা যান তিনি।
এদিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনিরে শ্রদ্ধা জানানো শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাব) উপাচার্য ড. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান বলেন, ৫২ এর ভাষা সৈনিকরাই জাতি বিনির্মাণে ভূমিকা রেখেছেন। হালিমা খাতুনের অসাম্প্রদায়িক জীবন দর্শন, মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সমাজ বিনির্মাণে অনেক প্রভাব ফেলেছে। বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে তার সাহিকত্যকর্মের প্রভাব রয়েছে। তার মৃত্যু জাতির অপূরণীয় ক্ষতি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ভাষা আন্দোলনের সময়ের স্মৃতিচারণ করে আরেক ভাষা সৈনিক রওশন আরা বাচ্চু বলেন, সে সময় কারফিউ ভেঙে নারীদের প্রথম যে মিছিলটি বেরিয়েছিল তার নেতৃত্বে ছিলেন হালিমা খাতুন।
বর্ষীয়ান সাংবাদিক কামাল লোহানী বলেন, ’মরার পরে জাতির যে ক্ষতি হয়েছে এইটা আমরা বুঝতে পারি। কিন্তু তিনি দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। অথচ রাষ্ট্র, সরকার কিংবা সংশ্লিষ্ট কোনো দফতর তার কোনো খবর নেয়নি। এ্টা তার প্রতি রাষ্ট্রের অকৃতজ্ঞতা। এ দুঃখটা সাংঘাতিকভাবে আমাদেরকে কষ্ট দেয়।’
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত এই শ্রদ্ধা পর্বে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
বুধবার জোহরের নামাজের্ পর ঢাবি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে জানাজা শেষে বিকেলে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।