পটুয়াখালীর লেবুখালীতে নবনির্মিত শেখ হাসিনা সেনানিবাস উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া বেশ কয়েকটি উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টারে করে লেবুখালীতে পৌঁছানোর পর এই সেনানিবাসের উদ্বোধন করেন। এটি দেশের ৩১তম সেনানিবাস।
নির্বাচনী প্রচার কাজে অংশ নিতে সিলেটের জনসভার পর বৃহস্পতিবার পটুয়াখালী ও বরিশাল সফরে আসেন শেখ হাসিনা। লেবুখালীতে তিনি সেনানিবাস উদ্বোধনের পাশাপাশি ৭ পদাতিক ডিভিশনসহ ১১টি ইউনিটের পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানে যোগ দেন। একই স্থান থেকে প্রধানমন্ত্রী ১৪টি উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন ও একটি কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
বিকেল ৩টায় বরিশাল বঙ্গবন্ধু উদ্যানে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় যোগ দেবেন শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা সেনানিবাসটি পায়রা নদীর তীর ঘেঁষে ১৯৭৫ সাল পরবর্তী সময়ে জেগে ওঠা চরের এক হাজার ৫৩২ একর জমিতে প্রায় এক হাজার ৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে। এ প্রকল্প ব্যয়ের পুরোটাই যোগান দেওয়া হবে সরকারের তহবিল থেকে। সরকার ঘোষিত ফোর্সেস গোল ২০৩০ এর আওতায় আন্তর্জাতিক মানের সেনাবাহিনী গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে- সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলকে জাতীয় প্রতিরক্ষাব্যুহে সন্নিহিত করার পাশাপাশি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জাতীয় নিরাপত্তা প্রদান এবং বহিঃশত্রুর আক্রমণ প্রতিহত করতে সক্ষম সুপ্রশিক্ষিত ও পেশাদার সেনাবাহিনীর কলেবর বৃদ্ধি করা।
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বৃহৎ উপকূলীয় এলাকা বরিশাল ও পটুয়াখালীতে সেনানিবাস নেই। জাতীয় নিরাপত্তা ও কৌশলগত কারণে এ অঞ্চল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রায়ই এ অঞ্চল প্রাকৃতিক দুর্যোগে আক্রান্ত হয়, তখন ২০০ কিলোমিটার দূরের যশোর সেনানিবাসের সহায়তা নিতে হয়। স্বাধীনতার পর থেকে যশোর সেনানিবাসে অবস্থিত ৫৫ পদাতিক ডিভিশনকে এ অঞ্চলের ২১টি জেলার প্রতিরক্ষা, দুর্যোগ মোকাবিলা এবং স্থানীয় প্রশাসনকে সহায়তার দায়িত্ব পালন করতে হয়।
এমন পরিস্থিতিতে ‘ফোর্সেস গোল ২০৩০’ এর আওতায় পটুয়াখালী জেলার লেবুখালীর পায়রা নদীর তীর ঘেঁষে সেনানিবাস স্থাপনের প্রস্তাব আনা হয়। এরপর ২০১৪ সালের ২৫ জুন একনেক সভায় এটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সম্মতি প্রদান করেন।
সেনানিবাস স্থাপনের জন্য এরই মধ্যে ৫৬৭ একর জমি রাজস্ব বাজেটের আওতায় অধিগ্রহণ করা হয়েছে। ১৯৭৫ সাল পরবর্তী সময়ে জেগে উঠা চর হওয়ায় সেখানে উল্লেখযোগ্য কোনো বসতি গড়ে উঠেনি। ফলে জমি অধিগ্রহণে বাড়িঘর কিংবা কোনো স্থাপনার জন্য ক্ষতিপূরণ বা পুনর্বাসন করতে হয়নি।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে গৃহীত এ প্রকল্পটি সেনা সদরের কিউএমজি শাখা, এম অ্যান্ড কিউ পরিদপ্তর, সেনা সদরের ইঞ্জিনিয়ার চিফ শাখা এবং ঢাকা সেনানিবাসের পূর্ত পরিদপ্তর বাস্তবায়ন করছে। শেখ হাসিনা সেনানিবাস আগামী ২০২১ সালের জুনের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
একনেক সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, পদ্মার ওপারে উপকূলীয় ২১ জেলার প্রতিরক্ষা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা ও স্থানীয় প্রশাসনকে সহায়তা করা হয় প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরের যশোর সেনানিবাস থেকে। এজন্য বরিশালে এ সেনানিবাস স্থাপন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।