লালনের গানে শ্রোতাদের স্বাগত জানালো বাউলিয়ানা

Post Image

ফুরালো অপেক্ষার পালা। আলোকিত মঞ্চ। রঙিন চারপাশ। তৈরি শিল্পীরা। আর্মি স্টেডিয়াম ক্রমেই মানুষের সমুদ্রে পরিণত হচ্ছে। সুরের মূর্ছনায় ভাসিয়ে দিতে পর্দা উঠলো ঢাকা আন্তর্জাতিক ফোক ফেস্টিভ্যাল (লোকসঙ্গীত উৎসব) ২০১৭’-র। জগতখ্যাত লোক গানের সম্রাট লালন সাঁইজির ‘ধন্য ধন্য বলি তারে’ গান দিয়ে শ্রোতাদের এবারের আসরে স্বাগত জানালো লোক গানের দল বাউলিয়ানা।

দলটি মঞ্চে আসতেই হাজারও উপস্থিতি হাত তালি দিয়ে অভিবাদন জানায়। শিল্পীরা কুশল বিনিময় শেষেই গানের নৌকা ভাসালেন শ্রোতাদের দরিয়ায়।
লালনের গান দিয়ে শুরু করে বাউলিয়ানা সিলেট অঞ্চলের লোক গানের রাজা হাছন রাজার ‘বাউলা কে বানাইলো রে’ গানটি পরিবেশন করে।

একনজরে বাউলিয়ানা

লোকগানের প্রতিভা অন্বেষণের সঙ্গীত প্রতিযোগিতা থেকে নির্বাচিত শিল্পীদের নিয়েই মূলত এ দল। সে দলে আছেন ‘ম্যাজিক বাউলিয়ানা’ প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় আসরের শিল্পী কামরুজ্জমান রাব্বি ও পাপিয়া জাহান। তাদের সঙ্গে আছেন প্রতিযোগিতার চ্যাম্পিয়ন শিবলী সাদিক এবং দ্বিতীয় রানারআপ লাল্টু হোসেন এবং প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় আসরের প্রথম রানারআপ শফিকুল ইসলাম।

পরিবেশনা শেষে বাংলাদেশ ও বাংলার লোক গানের একটা তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।

আজ আরও গাইবেন যারা

মাওরিকিও টিজুমবাহ অ্যান্ড সেক্সেট
ব্রাজিলের লোকসংগীতশিল্পী মাওরিকিও টিজুমবাহ। শৈশব থেকেই ব্রাজিলের ঐতিহ্যবাহী সাম্বা নৃত্য শুরু করেন তিনি। সে থেকে এ দীর্ঘ সময়ে কখনও থেমে থাকেনি তার সাম্বা চর্চা। পরবর্তী সময়ে টিজুমবাহ ‘সেক্সটেট’ ব্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত হোন এবং দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরতে থাকেন ব্রাজিলের ঐতিহ্যবাহী সাম্বা গানের সুর। তার কল্যাণে আজ বিশ্বব্যাপী পরিচিত ব্রাজিলের সাম্বা। এবার প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে আসছেন এ শিল্পী।

তেনজিন চোগিয়াল
‘ঢাকা আন্তর্জাতিক লোকসংগীত’ উৎসবে এবারই প্রথম গান পরিবেশন করবেন নেপালের তেনজিন চোগিয়াল। তিনি ড্রানিয়েন নামের এক ধরনের গিটার এবং লিংবু বাঁশি বাজিয়ে গান পরিবেশন করেন। এ দুটি বাদ্যযন্ত্র তিব্বতের ঐতিহ্যবাহী। তিব্বতে তেনজিনের জন্ম হলেও তিনি বেড়ে উঠেছেন উত্তর ভারতের ধর্মশালায়। তার গানে পাহাড়, ঝর্ণা ও বরফের আবেশ পাওয়া যায়। অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী তিব্বতের এ ফোকশিল্পীর ‘ঘাংরি কারপো’, ‘ভোয়েনাং ভোয়েমি’সহ অনেক জনপ্রিয় গান আছে।

ফকির শাহাবুদ্দিন
ফকির শাহাবুদ্দিন একাধারে গায়ক, গীতিকার, সুরকার এবং সঙ্গীত গবেষক। গ্রামে গ্রামে ঘুরে তিনি ৪০ থেকে ৪৫ হাজার বাউল গান সংগ্রহ করেছেন। জীবনের একটা সময় তিনি কিংবদন্তি শিল্পী শাহ আবদুল করিমের সান্নিধ্যে ছিলেন। তিনি মনের তাগিদে গান করেন। সেই গান মনের চাহিদা মেটায়, যা মানুষকে ভাবতে শেখায়। মানুষকে ‘অদেখার’ ঠিকানা সন্ধানে মন্ত্রণা দেয়। বাংলার বাউল সঙ্গীতকে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিতে চান এ শিল্পী। তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে গান পরিবেশন করেছেন। আজকের আয়োজনে তিনি গাইবেন জনপ্রিয় কয়েকটি লোকসংগীত।

পাপন
আসামের লোকগানের সঙ্গে ফিউশনধর্মী সংগীতায়োজনের জন্য হাজার হাজার ভক্তের কাছে একনামে পরিচিত পাপন। ২০১৫ সালে তার ব্যান্ডদল ‘দ্য ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’সহ আন্তর্জাতিক লোকসঙ্গীত উৎসবে অংশগ্রহণ করেন এ শিল্পী। গানের পাশাপাশি বাজাতে পারেন খোল, তবলা, গিটার ও হারমোনিয়াম। আসামের আঞ্চলিক গানের পাশাপাশি বাংলা, হিন্দি, পাঞ্জাবি, তামিল, মারাঠি ও মিশিং ভাষায় গান করেন তিনি।