অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আসন্ন বৈঠক ঘিরে বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিরাজ করছে তীব্র উত্তেজনা ও গভীর কৌতূহল। শুক্রবার (স্থানীয় সময়) সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত এই বহুল আলোচিত বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে লন্ডনে। ফলে দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের দৃষ্টি এখন ব্রিটিশ রাজধানী লন্ডনের দিকেই।
সম্প্রতি ড. ইউনূস জরুরি কিছু রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংস্কার করে আগামী এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দেন। কিন্তু এ ঘোষণার পরপরই রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয় বিতর্ক। রমজান, ঈদ ও আবহাওয়া—এই বাস্তবতা সামনে রেখে নির্বাচন এগিয়ে আনার দাবি জানিয়ে আসছে বিএনপিসহ বেশ কিছু দল। এ নিয়ে সরকারের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক আরও টানাপোড়েনে রূপ নেয়।
বিএনপির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ইউনূস-তারেক বৈঠকে নির্বাচন কমিশনের অধীনে ভোটের নির্দিষ্ট তারিখ ও ক্যালেন্ডার চূড়ান্ত করাই হতে পারে আলোচনার মুখ্য বিষয়।
বিশ্লেষকদের মতে, বৈঠকে সংস্কার ও বিচার ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ নিয়েও আলোচনা হতে পারে। যদিও বিচার নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা সম্ভাবনা কম, কারণ অধিকাংশ রাজনৈতিক দলই আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে নিরপেক্ষ বিচারের পক্ষপাতী। তবু, এই বিষয়ে একটি নীতিগত অবস্থান নেয়া হতে পারে।
সরকার গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখনো মতপার্থক্য রয়ে গেছে। যদিও কিছু সংস্কারে সর্বসম্মতি রয়েছে, তবে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, ক্ষমতার ভারসাম্য ও নির্বাচন পদ্ধতির মতো মৌলিক সংস্কার প্রশ্নে এখনও মতৈক্য হয়নি। তাই বৈঠকে এসব মৌলিক ইস্যু আলোচনার তালিকায় অগ্রাধিকার পেতে পারে।
সূত্র বলছে, আলোচনায় আসতে পারে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়—ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের শপথগ্রহণ। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই দলটি আন্দোলনে রয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, এই ইস্যুতেও একটি কার্যকর সমাধান খোঁজা হতে পারে।
এছাড়া, জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়েও হতে পারে বিশেষ আলোচনা। এতে রাজনীতিতে ভবিষ্যৎ রূপরেখা নির্ধারণের চেষ্টা থাকতে পারে বলেও জানা গেছে।