বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে করোনাভাইরাস বিরোধী টিকার অনুমোদন দিয়েছে রাশিয়া। দেশটি টিকার নাম রেখেছে ‘স্পুটনিক ৫’। এ টিকাটি উদ্ভাবনের ঘোষণার পর রাশিয়া জানিয়েছে তারা ৫০০ মিলিয়ন ভ্যাকসিন উৎপাদন করতে চায়।এই ভ্যাকসিন তারা বিশ্বব্যাপী সরবরাহ করবে।
রুশ সংবাদ সংস্থা তাসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ছয় দশক পার হয়েছে। আরও হিসেব মেলালে হয় ৬৩ বছর আগে ১৯৫৭ সালের ৪ অক্টোবর বিশ্বে মহাকাশে প্রথম পাড়ি দিয়েছিল সোভিয়েত কৃত্রিম উপগ্রহ ‘স্পুটনিক-১’। মহাকাশযানের সেই সাফল্যের প্রতি সম্মান জানিয়ে রাশিয়ার আবিষ্কৃত করোনাভাইরাসের টিকার নাম রাখা হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সোভিয়েত যুগকে যেন ভুলতে পারছে না রাশিয়া। সে সময় সোভিয়েত রাশিয়ার সঙ্গে আমেরিকার লড়াই ছিল মহাকাশ নিয়ে। আর এবারের লড়াইটা করোনাভাইরাসের টিকা উদ্ভাবন নিয়ে।
টিকা অনুমোদনের আগে রাশিয়ান ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের (আরডিআইএফ) প্রধান ক্রিমিল দিমিত্রিভ বলেছিলেন, স্পুটনিকের মহাকাশ যাত্রা দেখে বিশ্ব চমকে গিয়েছিল। আমেরিকানরা যেমন অবাক হয়েছিল। এবারেও একই ঘটনা ঘটবে। করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরিতে বিশ্ববাসী অবাক হয়ে রাশিয়ার সাফল্য দেখবে।
রাশিয়ার করোনাভাইরাস বিরোধী টিকা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। দুই মাসের কম সময়ে টিকাটি মানব শরীরে পরীক্ষার বিষয়ে তারা উদ্বেগ জানিয়েছেন।
যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রাশিয়ার টিকাটি পর্যালোচনা করা হবে। এ নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, রাশিয়াই প্রথম করোনার টিকা তৈরি করেছে। এ টিকা স্থায়ী বা টেকসই প্রতিরোধী সক্ষমতা দেখাতে সক্ষম।
রাশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিখাইল মুরশেঙ্কো বলেছেন, অনুমোদন পাওয়া এ কোভিড ভ্যাকসিন খুবই কার্যকর ও নিরাপদ।
২০ দেশের কাছ থেকে টিকা সরবরাহের অনুরোধ পেয়েছে রাশিয়া। মঙ্গলবার রাশিয়ান ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের (আরডিআইএফ) প্রধান ক্রিমিল দিমিত্রিভ এ তথ্য জানিয়েছেন।
প্রাথমিকভাবে যারা করোনার বিরুদ্ধে সামনের সারি থেকে লড়াই করছেন, তাদের প্রথমে এই ভ্যাকসিন দেয়া হবে বলে জানা যাচ্ছে। এদিকে রাশিয়ার এই করোনা ভ্যাকসিন এখনও মানব ট্রায়ালের সব ধাপ উত্তীর্ণ হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন পশ্চিমা বিশেষজ্ঞদের অনেকে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) বিশ্বে প্রথম নতুন করোনাভাইরাসের জন্য প্রথম টিকা নিবন্ধন করেছে রাশিয়া। গামালিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট ও রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় যৌথভাবে এই টিকার উন্নয়ন করেছে। টিকাটির প্রথম প্রয়োগ করা হয় দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মেয়ের শরীরে।