অবশেষে নতুন কোচ পাচ্ছে বাংলাদেশ। তিন ফরম্যাটের জন্য বাংলাদেশের প্রধান কোচ হচ্ছেন ইংল্যান্ডের প্রাক্তন উইকেটরক্ষক স্টিভ রোডস।
ক্রিকেটের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ইএসপিএন-ক্রিকইনফো বলছে, এই সপ্তাহের মধ্যেই বাংলাদেশের দায়িত্ব নিতে পারেন রোডস। গত অক্টোবরে চন্ডিকা হাথুরুসিংহের পদত্যাগের পর থেকেই প্রধান কোচ ছাড়া চলছে বাংলাদেশ দল।
কোচ খোঁজার জন্য কিছুদিন আগে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন ক্রিকেটার গ্যারি কারস্টেনকে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দেয় বিসিবি। মূলত কারস্টনের সুপারিশেই রোডসকে নিয়োগ দিতে যাচ্ছে বিসিবি। এ ছাড়া ব্যাটিং পরামর্শক হিসেবে ল্যান্স ক্লুজনারের সঙ্গেও আলোচনা চলছে বিসিবির।
রোডস আগামী সপ্তাহে ৫৪ বছরে পা দেবেন। ইংল্যান্ডের হয়ে তিনি ১১ টেস্ট ও ৯টি ওয়ানডে খেলেছেন। ২০০৬ সালে তিনি ওরচেস্টারশায়ারের কোচের দায়িত্ব পান। ইংলিশ কাউন্টি দলটির হয়ে ১৯৮৫ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত তিনি খেলেছেনও। কিন্তু গত বছর তাকে বরখাস্ত করে ওরচেস্টারশায়ার। এবং যুব বিশ্বকাপের আগে ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব-১৯ দলের কোচের পদ থেকেও তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
রোডস বলেছেন, ‘আমি নিশ্চিত করতে পারি, বাংলাদেশের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। এটাও নিশ্চিত করতে পারি, আমি আগ্রহী। আমার মতে এটা দারুণ সম্মানজনক দায়িত্ব। তবে এই মুহূর্তে কিছুই নিশ্চিত নয়।’
ইংলিশ কন্ডিশনের অভিজ্ঞতাই বাংলাদেশের কোচ হওয়ার দৌড়ে রোডসকে এগিয়ে রাখছে। আগামী বছর আবার ইংল্যান্ডেই বসছে বিশ্বকাপ। আগামী দুই দিনের মধ্যেই রোডস ঢাকায় এসে বোর্ডের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন।
নিজামউদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, ‘স্টিভ রোডস সংক্ষিপ্ত তালিকায় আছেন। আশা করছি, আগামী দুই দিনের মধ্যে তিনি বোর্ডের সঙ্গে দেখা করবেন। আপনারা অতীতে দেখেছেন রিচার্ড পাইবাস, ফিল সিমন্স এসেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় রোডস এসেও নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যারা আছেন, তাদের সঙ্গে দেখা করে উনার উপস্থাপনা দেবেন। বোর্ডে আসলে পরিকল্পনা চাওয়া হবে। আগামী বিশ্বকাপ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বোর্ড কীভাবে চায় সেটা জানাবে, উনি যেভাবে চান সেটা জানাবেন।’
‘আমরা অভিজ্ঞতাকে প্রাধান্য দিয়েছি, আমরা প্রাথমিকভাবে বেশ কয়েকজন কোচের সঙ্গে কথা বলেছি, বড় নাম ও অভিজ্ঞতা- দুটোই ছিল। কিন্তু বিভিন্ন কারণে হয়ত উনাদের পাওয়া পায়নি বা পরিবারের কারণে হয়ত উনারা আসতে পারেননি। এ মুহূর্তে যে কয়েকজন কোচ পাওয়া গেছে তার মধ্যে রোডস অভিজ্ঞদের একজন। মূলত আমরা অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দিচ্ছি। আপনারা জানেন, আগামী বিশ্বকাপ ইংল্যান্ডে হবে, এজন্য এটাও বিবেচ্য বিষয়। ইংল্যান্ডের কন্ডিশন বা ওই ধরনের কন্ডিশনের কাউকে যদি দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা যায়; তাহলে বাড়তি সুবিধা পাওয়া যেতে পারে’- যোগ করেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী।
এ মাসের শেষ দিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের আগে অনুশীলন ক্যাম্পে নতুন কোচ দলের সঙ্গে যোগ দেবেন বলে জানান নিজামউদ্দিন চৌধুরী।
গত নভেম্বর থেকেই নতুন কোচ খুঁজছে বিসিবি। অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার, টম মুডি, মাহেলা জয়াবর্ধনে, কুমার সাঙ্গাকারা, জাস্টিন ল্যাঙ্গার, পল ফারব্রেসকে কোচ হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হলেও তারা তা ফিরিয়ে দেন। রিচার্ড পাইবাস ও ফিল সিমন্স বিসিবিতে এসে সাক্ষাৎকার দিয়ে গিয়েছিলেন। পরে তারা যথাক্রমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও আফগানিস্তানের সঙ্গে কাজ শুরু করেন। এরপরই কোচ খুঁজে পেতে সাহায্যের জন্য কারস্টনের শরণাপন্ন হয় বিসিবি।