আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দলটির কেন্দ্রীয়, জেলা-উপজেলা এবং সহযোগী সংগঠনের শতাধিক নেতা সাক্ষাৎ করেছেন। এর মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিরা ছিলেন।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত আলাদা আলাদাভাবে সাক্ষাৎ করেন তারা। এ সময় নেতারা বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচন, আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন এবং সাংগঠনিক বিভিন্ন বিষয়সহ নিজেদের নানা সুবিধা-অসুবিধার কথা নেত্রীর কাছে তুলে ধরেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি দলের নেতাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং তাদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেন। এ সময় তিনি দলের মধ্যে কোনো ধরনের মতবিরোধ না রাখার নির্দেশনা দিয়ে বলেন, ‘সবাইকে মিলেমিশে দলের জন্য কাজ করতে হবে।’
এ সময় প্রসঙ্গক্রমে উপজেলা নির্বাচনের বিষয়টি উঠলে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘সামনে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এ নির্বাচন ঘিরে যেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না ঘটে। আমরা দলের কোনো প্রার্থী দিচ্ছি না। অবাধ-সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে। যার জনপ্রিয়তা বেশি সে জিতে আসবে।’
সাক্ষাতে অংশ নেওয়া নেতাদের মধ্যে ছিলেন রেলমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম, জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ইসহাক আলী খান পান্না, মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন, সাজ্জাদ সাকিব বাদশা, শেখ সোহেল রানা টিপু, এসএম জাকির হোসাইন, যুব মহিলা লীগ সভাপতি ডেইজী সরোয়ার, সাধারণ সম্পাদক শারমীন সুলতানা লিলি প্রমুখ।
এছাড়া রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ছায়াদত হোসেন বকুল, রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন, পীরগঞ্জ পৌর মেয়র তাজিমুল ইসলাম শামীম, পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিন রাজা, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মন্ডল, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শহিদুল ইসলাম পিন্টু, মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম রাব্বানী বিপ্লব, কক্সবাজার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল, পাবনার বেড়া পৌর মেয়র এসএম আসিফ শামস রঞ্জন প্রমুখ।
এছাড়া হকার্স লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং কুষ্টিয়া, নোয়াখালী, কক্সবাজার, নরসিংদী, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা, হবিগঞ্জসহ আরও কয়েকটি জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা এদিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
জানতে চাইলে রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ছায়াদত হোসেন বকুল যুগান্তরকে বলেন, অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নেত্রী (আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) দলে কোনো ধরনের মতবিরোধ বা বিভেদ না রেখে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গে নেত্রী বলেছেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। কোনোভাবেই যেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না হয়। এবার আমরা কাউকে মনোনয়ন দেইনি। দলীয় প্রতীক থাকবে না। যে বেশি জনপ্রিয় সেই নির্বাচিত হয়ে আসবে।’
জানতে চাইলে যুব মহিলা লীগ সভাপতি ডেইজী সরোয়ার বলেন, নেত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছি। এ সময় ৬ জুলাই আমাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচির বিষয়ে নেত্রীকে অবহিত করেছি। আমাদের সাংগঠনিক রিপোর্ট উপস্থাপন করেছি। যেসব জায়গায় কমিটি নেই এবং ২০০৯-১০ বা ২০১২-১৩ সালের পর আর সম্মেলন হয়নি সেগুলোর সম্মেলন করার কথা নেত্রীকে বলেছি। তিনি আমাদের এসব কাজগুলো করতে বলেছেন। ঢাকা মহানগরের কমিটিতে যেন বিতর্কিতরা না আসতে পারে এজন্য কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করা হয় সে বিষয়ে নেত্রীকে জানিয়েছি।
সাক্ষাতের বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল বলেন, নেত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছি। আগামী উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছি।