মেডিক্যালে যন্ত্রপাতি কেনাকাটার নামে ৩০ কোটি টাকা পাচার

Post Image

সিরাজগঞ্জের এম মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে যন্ত্রপাতি বসানো হয়নি। অথচ যন্ত্রপাতি আমদানির কথা বলে ৩০ কোটি টাকা হংকংয়ে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। এরকম অনিয়মের তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক। দুদকের তদন্তে বিভিন্ন জেলায় সরকারি হাসপাতালগুলোতে এরকম নানা অনিয়মের তথ্য একের এক পাওয়া যাচ্ছে। দুদক প্রস্তুতি নিচ্ছে মামলা দায়েরের। 

সিরাজগঞ্জের এম মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে কোনো যন্ত্রপাতিই এখনো বসানো হয়নি। অথচ যন্ত্রপাতি আমদানির কথা বলে ৩০ কোটি টাকা হংকংয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরে দুদকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এলো, ঠিকাদার জাহের উদ্দিন সরকারের ফারভেন্ট কোম্পানি নামে একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে হংকংয়ে। সরকারি ওই অর্থ তার প্রতিষ্ঠানের নামেই পাঠানো হয় আত্মসাতের উদ্দেশ্যে।

অনুসন্ধানে আত্মসাতের বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় ঠিকাদার জাহের উদ্দিন সরকার এবং হাসপাতালের প্রকল্প পরিচালক কৃষ্ণ কুমার পালের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে দুদক।

রাজধানীর শ্যামলীতে আড়াইশো শয্যার টিবি হাসপাতালেও যন্ত্রপাতি কেনার নামে নয়ছয়ের কথা জানা গেছে। দুদকের তথ্য বলছে, অতিরিক্ত দামে যন্ত্রপাতি কেনায় প্রায় ৫০ কোটি গচ্ছা গেছে সরকারের। এ বিষয়ে হাসপাতালটির যন্ত্রপাতি সরবরাহ এবং ক্রয় সংক্রান্ত সব নথি তলব করেছে দুদকের পরিচালক কাজী শফিকের তত্ত্বাবধানে থাকা একটি টিম।

এছাড়া, নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল, গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, মানিকগঞ্জের কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ এবং হবিগঞ্জের শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যন্ত্রপাতি কেনাকাটার নামে বড় জালিয়াতির তথ্য পেয়েছে দুদক।

নথিপত্র বলছে, ঠিকাদারদের সাথে এসব হাসপাতালে কেনাকাটায় যুক্ত কর্মকর্তারা কেনাকাটার নামে বড় অংকের অর্থ হাতিয়েছেন। আত্মসাতের সঠিক পরিমাণ জানতে সম্প্রতি বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ অধ্যক্ষ এবং ওইসব হাসপাতালের পরিচালক কাছে ২২ ধরণের তথ্য তলব করেছে দুদকের উপ-পরিচালক সামছুল আলমের নেতৃত্বাধীন একটি অনুসন্ধান টিম।

দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, যার নামেই অভিযোগ আসুক তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমাদের রিপোর্টে যার নামই আসুক সে যত ক্ষমতাধরই হোক না কেনো কেউই ছাড় পাবে না। 

দুদক চেয়ারম্যানের দাবি, তাদের তদন্তের কারণে সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে দুর্নীতি বন্ধ হয়েছে। তিনি বলেন, এখনতো কেনাকাটায় দুর্নীতির প্রশ্নই আসে না আমার ধারণা।ইতোমধ্যেই আমার কাছে তথ্য হচ্ছে নীতিমালা মেনেই সবাই কাজ করছে। আমাদের অনুসন্ধানী টিমও সেই তথ্যই দিচ্ছে।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে এসব হাসপাতালে দুর্নীতির দালিলিক প্রমাণ পাওয়ায় চলতি মাসেই কয়েকটি মামলা করবে দুদক।