৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বাকে ‘গণধর্ষণ’পুলিশ বলল ‘মিথ্যা’

Post Image

গাজীপুরের শ্রীপুরে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতিত এই গৃহবধূ চারজনকে অভিযুক্ত করে এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। তবে অভিযোগটি মিথ্যা বলে দাবি পুলিশের।

অভিযুক্তরা হলেন- শ্রীপুর পৌর এলাকার বহেরারচালা গ্রামের নুর মোহাম্মদের ছেলে তোফাজ্জল হোসেন, একই গ্রামের হিরন মাঝির ছেলে নাজমুল মাঝি, বিল্লাল মাঝির ছেলে কায়েশ মাঝি ও মামুন নামের এক যুবক। অভিযুক্তরা সবাই ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

নির্যাতিতার ভাষ্য, গত ৪ অক্টোবর (শুক্রবার) তিনি বাড়ির পাশে একটি পানির পাম্প চালু করতে গেলে অভিযুক্তরা তাকে মারধর করে আহত করে। পরে তাকে ধরে নিয়ে একটি কক্ষে নিয়ে যায়। সেখানে মাথায় আঘাত করলে তিনি মাটিতে পড়ে যান। পরে তাকে ধর্ষণ করা হয়। এক পর্যায়ে তিনি জ্ঞান হারালে তাকে ফেলে অভিযুক্তরা ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়।

ভুক্তভোগী এই নারী জানান, ২০১০ সালে তিনি অভিযুক্ত তোফাজ্জলের বাসা সংলগ্ন মার্কেটে দোকান ঘর ভাড়া নিয়ে কাপর সেলাইয়ের জন্য টেইলরিং হাউজ গড়ে তুলেন। কয়েকবছর নিজের শ্রমের আয় দিয়ে জায়গা কিনে একটি বাড়ি তৈরি করেন একই এলাকায়। এক বছর আগে তার বিয়ে হয় কারখানা এক শ্রমিকের সঙ্গে। এর পর তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন।

ওই নারী জানান, বর্তমানে তিনি আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা। সম্প্রতি তার বাড়ির জায়গা নিয়ে অভিযুক্তরা এই জমির মালিকানা ও তোফাজ্জলের কাছে দোকান ঘরের জামানতের টাকা দাবি করলে বিরোধ তৈরি হয়। পরে এ নিয়ে আদালতে তিনি মামলা দায়ের করেন। গত কয়েকমাস ধরে এ মামলা তুলে নেওয়ার চাপ দেন বিবাদীরা। এক পর্যায়ে তার একমাত্র সম্বল বাড়িটিও দখল করে নেয় তারা।

ভুক্তভোগী ওই নারী জানান, সর্বশেষ তাকে এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে তাকে যৌন হয়রানি করেন অভিযুক্তরা। এসময় যৌন হয়রানির ভিডিওচিত্র ধারণ করা আছে এমন হুমকি দিয়ে ঘটনা প্রকাশ করলে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো হয়। পরে তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করলে অভিযুক্তরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন।

এদিকে আজ শনিবার পুলিশ তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে যান। পরে পুলিশ চলে যাওয়ার পর অভিযুক্তরা এই নারীর থাকার ঘরের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

নারীকে যৌন হয়রানির বিষয়ে অভিযুক্ত তোফাজ্জল হোসেনের দাবি, তাদের হয়রানির উদ্দেশ্যেই এই নারী মূলত অভিযোগ দায়ের করেছে। ধর্ষণের সঙ্গে তিনি জড়িত নন।

এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী জানান, পুলিশ বিষয়টি অনুসন্ধান করেছে। এই নারীর দায়েরকৃত অভিযোগটি একটি মিথ্যা ঘটনা মাত্র।