আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে মশাল মিছিল।

Post Image

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদ (২১) হত্যার বিচারের দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে মশাল মিছিল করা হয় ।মিছিল মসজিদ চত্বর থেকে শুরু হয়ে সাইন্স ফ্যাকাল্টি হয়ে মেইন গেট দিয়ে লক্ষীবাজার হয়ে বাহাদুর শাহ পার্ক প্রদক্ষিণ করে ক্যাম্পাসের শান্ত চত্বরে জড়ো হয় এবং আবরারের হত্যাকারীদের চিন্হিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়।

রোববার (৬ অক্টোবর) দিবাগত মধ্যরাতে বুয়েটের সাধারণ ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ফাহাদকে শেরে বাংলা হলের দ্বিতীয় তলা থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান। সোমবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

জানা গেছে, রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার পর শের-ই-বাংলা হলের ১০১১ নং রুম থেকে কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে ডেকে নিয়ে যায়। তারপর থেকেই সে নিখোঁজ ছিল।

ধারণা করা হচ্ছে তাকে শিবিরকর্মী সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।  ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ওই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিল, তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়া।

এর আগে গত ৫ অক্টোবর বিকেল ৫টা ৩২ মিনিটে ভারতকে সমুদ্র বন্দর, পানি ও গ্যাস দেয়ার চুক্তির বিরোধিতা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ। 

তার স্ট্যাটাসটি যা ছিলো:
১. ১৯৪৭ এ দেশভাগের পর দেশের পশ্চিমাংশে কোন সমুদ্রবন্দর ছিল না। তৎকালীন সরকার ৬ মাসের জন্য কলকাতা বন্দর ব্যবহারের জন্য ভারতের কাছে অনুরোধ করল। কিন্তু দাদারা নিজেদের রাস্তা নিজেদের মাপার পরামর্শ দিছিলো। বাধ্য হয়ে দুর্ভিক্ষ দমনে উদ্বোধনের আগেই মংলা বন্দর খুলে দেওয়া হয়েছিল। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আজ ইন্ডিয়াকে সে মংলা বন্দর ব্যবহারের জন্য হাত পাততে হচ্ছে।

২.কাবেরি নদীর পানি ছাড়াছাড়ি নিয়ে কানাড়ি আর তামিলদের কামড়াকামড়ি কয়েকবছর আগে শিরোনাম হয়েছিল। যে দেশের এক রাজ্যই অন্যকে পানি দিতে চাই না সেখানে আমরা বিনিময় ছাড়া দিনে দেড়লাখ কিউবিক মিটার পানি দিব।

৩.কয়েকবছর আগে নিজেদের সম্পদ রক্ষার দোহাই দিয়ে উত্তরভারত কয়লা-পাথর রপ্তানি বন্ধ করেছে অথচ আমরা তাদের গ্যাস দিব। যেখানে গ্যাসের অভাবে নিজেদের কারখানা বন্ধ করা লাগে সেখানে নিজের সম্পদ দিয়ে বন্ধুর বাতি জ্বালাব।

হয়তো এসুখের খোঁজেই কবি লিখেছেন-
“পরের কারণে স্বার্থ দিয়া বলি
এ জীবন মন সকলি দাও,
তার মত সুখ কোথাও কি আছে
আপনার কথা ভুলিয়া যাও।”

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি/মুজাহিদ