নতুন সুনামির আতঙ্কে ইন্দোনেশিয়া

Post Image

নতুন আরেকটি সুনামির আশঙ্কায় ইন্দোনেশিয়ার আনাক ক্রাকাটাও আগ্নেয়গিরির কাছাকাছি ও উপকূলবর্তী এলাকার লোকজনকে সমুদ্র সৈকত থেকে নিরাপদ দূরত্বে সরে যেতে বলা হয়েছে।

শুক্রবারের পর রোববারও আরেক দফা আগ্নেয়গিরি থেকে উদগীরণ হয়ে ছাই এবং ধোঁয়া ছড়িয়ে যেতে দেখা যায়।

ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলা সংস্থার প্রধান সুতপো পুরয়ো নুগ্রহো শনিবার জাভায় সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ভূ-তত্ত্ব, আবহাওয়াবিজ্ঞান ও ভূ-পদার্থবিদ্যা সংস্থাগুলোর পরামর্শ, জনগণের আপাতত কিছুটা সময় সমুদ্র সৈকতসহ উপকূল থেকে দূরে থাকা উচিত।

‘নতুন করে সুনামি হওয়ার আশঙ্কা এখনো রয়ে গেছে। কারণ আনাক ক্রাকাটাও থেকে এখনো অগ্ন্যুদ্‌গীরণ হচ্ছে, যা যে কোনো সময় আরেকটা সুনামি ঘটাতে পারে,’ বলেন তিনি।

শনিবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৯টায় ইন্দোনেশিয়ার সুন্দা প্রণালিতে ভয়াবহ সুনামির সৃষ্টি হয়। পরপর দু’টো বিশাল ঢেউয়ের আঘাতে উপকূলবর্তী পান্ডেগলাং, সাউথ লাম্পাং এবং সেরাং এলাকায় ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটে।ইন্দোনেশিয়া-আরেকটি সুনামির আশঙ্কা-আগ্নেয়গিরি

সুনামিতে এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২২২ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছে ৮৮৩ জন। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ২৮ জন।

বিবিসি জানিয়েছে, শুক্রবার ক্রাকাটাও আগ্নেয়গিরি থেকে হঠাৎ করেই উদগীরণ শুরু হয়। ২ মিনিট ১২ সেকেন্ড তীব্র মাত্রার অগ্ন্যুৎপাতে ছাই ও ধোঁয়ার মেঘ পাহাড়ের ওপর প্রায় ৪শ’ মিটার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।

ওই অগ্ন্যুুৎপাতের ফলে সমুদ্রের তলদেশে ভূমিধস হওয়ায় ভূমিকম্প থেকে সুনামির উৎপত্তি হয়েছে বলে ধারণা করছে দেশটির দুর্যোগ মোকাবেলা সংস্থা।ইন্দোনেশিয়া-আরেকটি সুনামির আশঙ্কা-আগ্নেয়গিরি

কোনো রকম পূর্বসতর্কতা না পাওয়ায় এত মানুষ হতাহত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিছু কিছু জায়গায় ভূমিকম্পের সাথে সাথে সুনামি সতর্কতা সাইরেন বাজানো হয়েছিল বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণত ভূমিকম্প থেকে সৃষ্ট সুনামিতে সমুদ্রের পানি যেমন দ্রুতগতিতে আঘাত করে আবার সব টেনে নিয়ে সমুদ্রে ফিরে যায়, এবারের সুনামিতে তেমনটা হয়নি।

কিন্তু তারা এটাও বলছেন, আগ্নেয়গিরির কাছে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিলেও লোকজন প্রস্তুতি নেয়ার মতো যথেষ্ট সময় পেত না।ইন্দোনেশিয়া-আরেকটি সুনামির আশঙ্কা-আগ্নেয়গিরি

ধ্বংসস্তুপের নিচে কেউ জীবিত থাকতে পারে, এই আশায় উদ্ধারকর্মীরা জোর অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।

হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে উদ্ধারকারী দলের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত ধ্বংসস্তুপের নিচে উদ্ধার অভিযান চলছে। সেগুলো থেকে জীবিত কাউকে পাওয়া যেতে পারে বা মৃতদেহ উদ্ধার হতে পারে।

শনিবার একটি চার্টার প্লেন থেকে ধারণ করা ভিডিওতে দেখা গেছে নতুন অগ্ন্যুৎপাতটিও অনেক বেশি ভয়াবহ।