প্রসঙ্গ নির্বাচন: বিএনপির পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-যোগ

Post Image

দেশে এখন নির্বাচনী আমেজ। নৌকা-ধানের শীষের লড়াইয়ে ক্ষমতায় যেতে নানা সমীকরণ। খালেদা জিয়া জেলে, ভাড়াটে হয়ে বিএনপির মুখ হিসেবে এসেছেন ড. কামাল হোসেন। ঐক্যফ্রন্ট করার আগে জামায়াত-যুদ্ধাপরাধী প্রশ্নে বড় বড় বুলি আওড়ালেও ড. কামাল সব নীতি আদর্শ বিসর্জন দিয়ে জামায়াতকেই কাছে টেনেছেন। দণ্ডিত তারেককে নিয়েও তার কোনো প্রশ্ন নেই। বরং স্মৃতির মিনারে দাঁড়িয়ে জামায়াত প্রশ্নে সাংবাদিকদের ধমকেছেন, যদিও পরে ক্ষমা চেয়েছেন।

বিএনপির মনোনয়ন বোর্ডেই ভিডিও কনফারেন্সে হাজির হয়েছিলেন তারেক রহমান। আর এবার নাকি ব্যাপক মনোনয়ন বাণিজ্য হয়েছে, বিএনপি নেতারাই এ অভিযোগ করেছেন। এ অভিযোগের মধ্যেই বিএনপি এবার জামায়াতকে নিজেদের বুকে টেনে নিয়েছে। বিজয়ের মাসেই খোলা দরজা দিয়েই বিএনপির ঘরে ঢুকে পড়েছে জামায়াত। শোনা যাচ্ছে তারেকের নির্দেশেই চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীর সন্তান ও জামায়াত নেতারা ধানের শীষে নির্বাচন করছে। বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়েছে একুশে আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা করে শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টার সাথে জড়িতদের আত্মীয়-স্বজন। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর সারাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, সাংবাদিক ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী, সমর্থকদের ওপর যারা নির্যাতন চালিয়েছিল তারাও মনোনয়ন পেয়েছে। বাংলাভাই-শায়খ রহমানের গডফাদাররাও বাদ যাননি।

বিএনপি-জামায়াতের অগ্নি সন্ত্রাসের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে চুপচাপই ছিল জামায়াত-বিএনপির দুর্বৃত্তরা। সারাদেশে যখন নির্বাচনী হাওয়া বইছে তখন বিএনপি-জামায়াত আবার তাদের পুরনো চেহারা দেখাতে শুরু করেছে। প্রচার শুরুর সাথে সাথে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের খুন করতে শুরু করেছে তারা। এসব কিসের ইঙ্গিত?

কার ইঙ্গিতে রক্ত ঝরাচ্ছে বিএনপি-জামায়াত? শোনা যাচ্ছে নির্বাচনের আগে নড়ে চড়ে বসেছে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। আওয়ামী লীগ নেতারা বারবারই অভিযোগ করে আসছেন, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে পাকিস্তান দূতাবাসে বৈঠক করেছে বিএনপি। আর এর প্রমাণও মিললো পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের সাথে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ফাঁস হওয়া ফোনালাপে। ড. মোশাররফ বিএনপিতে জামায়াতের এজেন্ট বলেই রাজনৈতিক মহলে পরিচিত।

আইএসআইয়ের কর্মকর্তা মেহমুদের সাথে টেলিফোনে কথা বলেন মোশাররফ। ফাঁস হওয়া ফোনালাপে নির্বাচনে জিততে আইএসআইয়ের সহায়তা চান তিনি। ওই কর্মকর্তা দেখা করতে চাইলেও মোশাররফ বলেন, এখন তার সাথে দেখা করা সম্ভব নয়। তবে এদেশে আইএসআইয়ের এজেন্টের সাথে দেখা করতে রাজি হন তিনি।

খন্দকার মোশাররফ হোসেন-আইএসআই-ফোনালাপ ফাঁস

ওই এজেন্টের সাথে বসে কী এমন ছক কষতে চায় মোশাররফের বিএনপি? আইএসআইয়ের সাথে মিলে নির্বাচনের আগে কি আরো রক্ত ঝরাতে চায় তারা? বিএনপি-জামায়াত-আইএসআই এক হয়ে একটা গণ্ডগোল পাকানোর চেষ্টা করছে তাদের ফোনালাপে মোটামুটি এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে। ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পরও আইএসআই কর্মকর্তার সাথে কথা বলার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন মোশাররফ।

বিএনপির আইএসআই-যোগ নতুন নয়। পাকিস্তানের সাথে সখ্যতাটা বিএনপির জন্মকাল থেকেই। আইএসআইয়ের সাথে তারেক রহমানের একাধিক বৈঠকের কথাও বারবার আলোচিত হয়েছে। গ্রেনেড হামলা চালিয়ে শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টাকারী তারেক ঘনিষ্ঠ সাবেক শিক্ষামন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন আইআইয়ের সহায়তায় পাকিস্তানেই পাড়ি জমিয়েছে। এভাবে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার নড়াচড়া বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য অশুভ ইঙ্গিত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তাই আরো বেশি তৎপর থাকতে হবে। এক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে হবে নির্বাচন কমিশনকেও।