মারা যাওয়ার আগে হামলাকারীদের নাম জানিয়েছিলেন সুবর্ণা

Post Image

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আনন্দ টিভির পাবনা প্রতিনিধি সুবর্ণা আক্তার নদীকে মঙ্গলবার (২৮ আগস্ট) ১০টায় নিজ বাসার সামনে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। সুবর্ণা নদী জেলার আটঘরিয়া উপজেলার একদন্ত গ্রামের মৃত আইয়ুব আলীর মেয়ে।

এ ঘটনায় সন্দেহ করা হচ্ছে তার সাবেক স্বামী রাজীব হোসেন ও শ্বশুর আবুল হোসেনকে। আহত অবস্থায় সুবর্ণা তার মাকে বলেন, ‘রাজীব ও তার সহকারী মিলনসহ কয়েকজন আমাকে কুপিয়েছে।’

এ ব্যাপারে সুবর্ণার মা মর্জিনা বেগম বলেন, ‘আহত মেয়েকে নিয়ে আমি হাসপাতালে যাই। হাসপাতালে যাওয়ার পথে সে আমাকে হামলাকারীদের নাম বলে।’

‘সে বলে, রাজীব ও তার সহকারী মিলনসহ কয়েকজন তাকে কুপিয়েছে। আমি তাদের চিনতে পেরেছি। আমি তাদের ফাঁসি চাই।’

স্বামী ও শ্বশুরের পাশাপাশি সুবর্ণা যে বাড়িতে ভাড়া থাকতেন তার কেয়ারটেকারকেও সন্দেহ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে মঙ্গলবার রাতে সুবর্ণার শ্বশুর ও কেয়ারটেকার ইমরান হোসেনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। তবে রাজীব এখনও পলাতক।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাজীবের বিরুদ্ধে গত বছর একটি যৌতুক মামলা করেছিলেন সুবর্ণা। মামলা নং-সিআর ২৯৭/১৭ (পাবনা)। মঙ্গলবার (২৮ আগস্ট) ওই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ছিল। এইদিন সাক্ষ্য দেন সুবর্ণার বড় বোন চম্পা বেগম।

সাক্ষ্য রাজীবের বিপক্ষে যাওয়ায় আদালত প্রাঙ্গণে তাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডাও হয়। তারপর সবুর্ণা তার অফিসে যায় এবং রাতে কাজ শেষে বাড়ির গেটে ঢোকামাত্রই ৩/৪ জন দুর্বৃত্ত এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তাকে ফেলে রেখে চলে যায়। এ সময় স্থানীয়দের সহযোগিতায় সুবর্ণাকে উদ্ধার করে তার মা পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

বড় বোন চম্পা বেগম বলেন, ‘মঙ্গলবার (২৮ আগস্ট) সকালে আমার বোনের যৌতুক মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ ছিল। আমার সাক্ষী আসামির বিপক্ষে যাওয়ায় রাজীব ও তার সহযোগীরা আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। এক পর্যায়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। আমরা তখন সেখান থেকে বাড়িতে চলে আসি।’

বাড়ির কেয়ারটেকার ইমরান হোসেনের ছোট ভাই মেহেদি বলেন, ‘আমার ভাই এই বাড়ির কেয়ারটেকার। ঘটনার সময় ভাই বাড়িতে ছিলেন না। পরে খবর পেয়ে ভয়ে বাড়ি ফেরেন নাই। রাত আড়াইটার দিকে বাড়ি আসলে পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায়। তার সঙ্গে আরও কয়েকজন বন্ধুকেও ধরেছে।’

পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কোনও মামলা হয়নি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। আমরা সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি। তবে খুব শিগগিরই আমরা মূল হোতাদের শনাক্ত এবং গ্রেফতার করতে সক্ষম হবো।’