অসমের রাজধানী দিল পুরের গোহাটির আট কিলোমিটার দূরে নীলাচল পর্বতে অবস্থিত একটি সুবিখ্যাত প্রাচীন মন্দির কামাক্ষ্যা। মা কামাক্ষ্যার মন্দিরকে একান্ন সতী পিঠের মধ্যে একটি। মা কামাক্ষ্যার চমৎকারী শক্তির জন্যই একান্ন সতী পিঠের অন্যতম সতী পিঠ হিসেবে মানা হয়।
কালিকা পুরাণ অনুসারে একবার মাতা সতীর পিতা দক্ষরাজ মাতা সতী ও ভগবান শিবকে ছাড়া সমস্ত দেবী দেবতাদের মহাযজ্ঞে আমন্ত্রণ জানান।
তখন মাতা সতী ও ভগবান শিবের মধ্যে মতবিরোধ হওয়ায় মাতা সতী পিতা দক্ষরাজের ভবনে উপস্থিত হন এবং পিতাকে জিজ্ঞাসা করাই তাঁর ভবনে উপস্থিত সমস্ত দেবী দেবতাদের সামনে ভগবান শিবকে নানা কটূ কথা র দ্বারা অপমান করেন। সেই অপমান সহ্য করতে না পেরে মাতা সতী ওই মহাযজ্ঞের অগ্নিকুণ্ডে প্রাণ ত্যাগ করেন। দেবাদিদেব মহাদেব স্ত্রীর মৃত্যু সহ্য করতে না পেরে মাতা সতীর দেহ কাঁধে নিয়ে রুদ্র মূর্তি ধারণ করে তান্ডব নৃত্য শুরু করেন। তখন সমস্ত দেবতা দের অনুরোধে ভগবান শ্রীবিষ্ণু সুদর্শন চক্রের মাধ্যমে মাতা সতীর দেহ ছিন্ন ছিন্ন করে দেন যেখানে যেখানে মাতার শরীরের অংশ গিয়ে পড়ে সেখানে সেখানে সতী পিঠ তৈরি হয়।
কামাক্ষ্যা মন্দিরে মাতার শরীরের অংশের মধ্যে যোনি পড়ায় এখানে যোনি পূজা করা হয়। যোনিকেই পৃথিবী সৃষ্টির একমাত্র উৎস এবং পৃথিবীতে জন্ম নেওয়া সমস্ত মানুষের প্রবেশদ্বার হিসেবে মানা হয়। মাতার গর্ভগৃহে কোনো মূর্তি পূজা করা হয় না। মূল গর্ভগৃহে মাতার যোনি পূজা করা হয়। তবে বাইরের মন্দিরে মাতার দশটি রুপকে পূজো করা হয়। অম্ববাচীর সময় মাতার মন্দিরে প্রবেশ করা যায় না। সেই তিন দিন মন্দিরের প্রবেশদুয়ার বন্ধ রাখা হয়।
মহাদেবের তরুণ স্ত্রী ও মোক্ষদাত্রীর আদতে কামাক্ষ্যা নাম টির নামকরণ করা হয়। দেবী কামাক্ষ্যাকে তন্ত্রশক্তির দেবী ও তার মন্দিরকে তন্ত্র সাধনার সর্বোচ্চ স্থান হিসেবে ধরা হয়। এখানে কালাজাদু ও অশুভ শক্তির দ্বারা প্রভাবিত ব্যক্তিকে সুস্থ করানো সম্ভব এবং তাদের সুস্থ করানোর নানা উপাই যুগ যুগ ধরে দেওয়া হয়ে আসছে এই মন্দিরে। সবসময় এখানে ভক্তদের আনাগোনা চলতে থাকে। তবে এই অম্বুবাচীর সময় ৫টি নিয়ম মেনে চললে ভক্তদের সমস্ত মনস্কামনা পূরণ হয়। ভিন্ন সম্পদায়ের মানুষ এখানে এসে ভক্তি ও নিষ্ঠার
সাথে পূজা করলে পূর্ণ হয় তাদের মনের কামনা এমনটাই বলছেন মন্দিরের পুরোহিত ও দর্শনার্থীরা।
পাঁচটি নিয়ম কী কী সময় নষ্ট না করে জেনে নিন: –
১) নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে হোম অর্থাৎ অগ্নি স্থাপন করে সেই অগ্নির সামনে বসে নিজের ইষ্ট দেবতাকে মন থেকে সরণ করতে হবে।
২) নিজের মনের ইচ্ছা পূরনের জন্য মধ্য রাতে নির্জনে বসে কামাখ্যা দেবীকে একমনে সরণ করে প্রার্থনা করতে হবে।
৩) কামাখ্যা মন্দিরের সন্নিকটে অবস্থিত সৌভাগ্যকুন্ড। সেই সৌভাগ্যকুন্ডের পশ্চিম পাড়ে বসে পুরোহিত নির্ধারিত নিয়ম মেনে বুক সমান জলে নেমে তর্পন করতে হবে।
৪) এই সৌভাগ্যকুন্ডের পাশেই অবস্থিত আছে এক গনেশ বিগ্রহ। সৌভাগ্যকুন্ডে স্নান করে ভিজে শরীরে এই বিগ্রহকে দর্শন করতে হবে এবং পুরোহিত দিয়ে পুজো করাতে হবে।
৫) কামাখ্যা মন্দিরে অবস্থিত গুরুর কাছ থেকে দীক্ষা নেবার পর গুরুর দেওয়া ইষ্টমন্ত্র দিনের মধ্যে যত যতবার সম্ভব জপ করতে হবে।
মনে করা হয় এই ৫টি নিয়ম সঠিক ভাবে মেনে চললে একজন দর্শনার্থীর মনের ইচ্ছে পূর্ণ হতে পারে।।
এই তথ্যগুলি অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন, আপনিও জানুন তাদেরকেও জানান, শেয়ার করুন।
এবং আপনার মূল্যবান বক্তব্য কমেন্টে জানাবেন, ধন্যবাদ ।
নীচের আর্টিকেল টা ক্লিক করুন ;পড়লে চোখ কপালে উঠবে।