কোটা আন্দোলন স্থগিত, ঢাবি আনন্দ মিছিল

Post Image

সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে চলমান আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদ।

বৃহস্পতিবার (১২ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন আন্দোলন স্থগিতের এ ঘোষণা দেন।

পরেঢাবি ক্যাম্পাসে অানন্দ মিছিল করেছে অান্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পৌনে ১২টার ঢাবির রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে মিছিলটি শুরু হয়। এরপর নীলক্ষেত, শহীদ মিনার, দোয়েল চত্বর ও শাহবাগ হয়ে ক্যাম্পাসে এসে মিছিলটি শেষ হয়।

এদিকে সংবাদ সম্মেলনে কোটা প্রথা বাতিলের ঘোষণা দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘মাদার অব এডুকেশন’ উপাধি দিয়েছেন কোটা সংস্কার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতি সম্মান জানিয়ে এবং মেনে নিয়ে চলমান আন্দোলন স্থগিত করা হলো।

তিনি আরও বলেন, আপনার ঘোষণাকে আমরা স্বাগত জানাই। ছাত্রসমাজের কথা চিন্তা করে আপনার গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্যতে আপনি সকল ছাত্রসমাজের মন জয় করে নিয়েছেন। আমরা সকল ছাত্রসমাজ আপনাকে ধন্যবাদ ও সাধুবাদ জানাই।

সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আমরা চাই সংসদের আইনের মাধ্যমে বা এ্যাক্ট অব পার্লামেন্টের মাধ্যমে এ দেশের কোটা সম্পর্কিত সকল আইন বাতিল করুক এবং দেশের সকল সরকারি চাকরিতে নিয়োগের জন্য এক এবং অভিন্ন আইন এবং নিয়োগ সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়ন করুক এবং সেই আইন কবে থেকে কার্যকর হবে সেইটা সেই আইনেই উল্লেখ করে সেই আইনের দ্রুত কার্যকারিতা দিক ও দ্রুততম সময়ে প্রজ্ঞাপন জারি করুক।

এ সময় তারা বেশ কয়েকটি দাবি করেন। দাবির মধ্যে রয়েছে, সারা দেশ যাদের নামে মামলা হয়েছে সেসকল মামলা প্রত্যাহার করতে হবে ও যারা এখনো আটক আছে তাদেরকে আজকেই ছেড়ে দিতে হবে। আহতদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ও তাদের খোঁজখবর নিতে হবে। দোষী পুলিশদের শাস্তি প্রদান করতে হবে। আন্দোলনকারীদেরকে কোনো হয়রানি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করা যাবে না।

এদিকে বুধবার (১১ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে বলেছিলেন, কেউ যখন কোটা চায় না, তখন সব কোটা বাতিল। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও প্রতিবন্ধীদের বিশেষ ব্যবস্থায় সরকারি চাকরিতে নিয়োগ দেয়া হবে।

কোটা পদ্ধতির সংস্কারের দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরে সারা দেশে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় পুলিশ অনেককে গ্রেপ্তার করেছে। অনেকে আহত হয়েছেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গেলো ৯ এপ্রিল আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ২০ সদস্যের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করে সরকারের পক্ষ থেকে ১ মাস সময় নেয়া হয়। পরে আন্দোলন ১ মাস স্থগিত করা হলেও পরের দিন আবার আন্দোলনে নামেন এক অংশের শিক্ষার্থীরা।

শুরুতে আন্দোলনকারীরা পাঁচ দফা দাবি করেন। যা হচ্ছে, সরকারি নিয়োগে কোটার পরিমাণ ৫৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা, কোটার যোগ্য প্রার্থী না পেলে শূন্যপদে মেধায় নিয়োগ, কোটায় কোনো ধরনের বিশেষ নিয়োগ পরীক্ষা না নেয়া, সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে অভিন্ন বয়সসীমা, নিয়োগ পরীক্ষায় একাধিকবার কোটার সুবিধা ব্যবহার না করা।