ঢাকা, বাংলাদেশ: একটি স্যামসাং ফ্রিজ নিয়ে দীর্ঘদিনের ভোগান্তির পর এক ক্রেতা প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে প্রতারণা এবং নিম্নমানের সেবা প্রদানের অভিযোগ এনে দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন। নোটিশে তিনি স্যামসাং বাংলাদেশ, দক্ষিণ কোরিয়ার মূল কোম্পানি এবং তাদের আজিমপুর শাখার ম্যানেজারের কাছে ক্ষতিপূরণ ও পুরো টাকা ফেরত চেয়েছেন।
ঘটনার সূত্রপাত হয় ২০২০ সালে, যখন ভোক্তা ৩৪,০০০ টাকায় স্যামসাং-এর ২১৮ লিটার ফ্রিজটি কেনেন। সে সময় আজিমপুর শাখার ম্যানেজার মৌখিকভাবে আশ্বাস দিয়েছিলেন যে ফ্রিজের পাইপ ও মূল কাঠামোতে কোনো জং ধরবে না বা ক্ষয় হবে না।
অভিযোগের বিস্তারিত:
ক্রেতার অভিযোগ অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চ মাসে ফ্রিজটি হঠাৎ করে ঠান্ডা হওয়া বন্ধ করে দেয়। সার্ভিস টেকনিশিয়ান এসে গ্যাসের সমস্যার কথা বলে ৪,৫০০ টাকা নিয়ে গ্যাস রিফিল করেন। কিন্তু মাত্র সাত দিনের মধ্যেই একই সমস্যা আবার দেখা দেয়।
এরপর ফ্রিজটি মৌচাক সার্ভিস সেন্টারে পাঠানো হয়। ভোক্তা জানান, সেখানে এক মাস রাখার পর ফ্রিজের মূল কাঠামো পরিবর্তন করে অতিরিক্ত ৮০,০০০ টাকার সার্ভিস চার্জ দাবি করা হয়। যদিও তিনি এর আগে ১৩,০০০ টাকা সার্ভিস চার্জ হিসেবে পরিশোধ করেছিলেন। এরপরও মাত্র দুই মাস পর একই সমস্যা আবার দেখা দিলে টেকনিশিয়ান ৫০০ টাকা নিয়ে এসে পুনরায় লিকেজ শনাক্ত করেন।
ভোক্তা তার নোটিশে উল্লেখ করেছেন, ফ্রিজের পাইপগুলো লোহার তৈরি হওয়ায় সেগুলোতে মরিচা ধরেছে। বিক্রির সময় এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করা হয়েছিল, যা ভোক্তা অধিকার আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
আইনি পদক্ষেপ:
এর আগে গত ৯ সেপ্টেম্বর, ক্রেতা প্রথম আইনি নোটিশ পাঠিয়েছিলেন। তার জবাবে স্যামসাং কর্তৃপক্ষ ৬০% টাকা ফেরত দেওয়ার প্রস্তাব দেয়, যা তিনি প্রত্যাখ্যান করেন।
নতুন ও চূড়ান্ত নোটিশে ক্রেতা তিনটি প্রধান দাবি জানিয়েছেন:
অবিলম্বে ফ্রিজের ক্রয়মূল্য ৪৭,০০০ টাকা সম্পূর্ণরূপে ফেরত।
নিম্নমানের সেবা এবং মানসিক ভোগান্তির জন্য ৫০,০০০ টাকা ক্ষতিপূরণ।
উপরে উল্লিখিত মোট ৯৭,০০০ টাকা আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে পরিশোধ।
নোটিশে আরও বলা হয়েছে, যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান না করা হয়, তবে ক্রেতা আইন অনুযায়ী ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন, এবং দেওয়ানি আদালতে মামলা করবেন। প্রয়োজনে তিনি প্রতারণার জন্য ফৌজদারি মামলাও দায়ের করবেন।
ক্রেতা জানিয়েছেন, এই আইনি প্রক্রিয়ার ফলে উদ্ভত সব দায়দায়িত্ব স্যামসাং কর্তৃপক্ষকেই বহন করতে হবে।